Fact

মৃতপ্রায় চলচ্চিত্রাঙ্গনের ঘাড়ে সাংবাদিকদের ভূত!

প্রকাশ কুমার চট্টোপাধ্যায়: ২০২২ সালের শেষের দিকে একটি বাংলা চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। চলচ্চিত্রটি হল পায় মাত্র ১১টি। বাংলাদেশে প্রতি বছর এমন বহু সিনেমা মুক্তি পায়, কিন্তু আমরা তবুও দুই বছরের পুরাতন একটি চলচ্চিত্রকে গুরুত্ব দিচ্ছি অন্য একটি কারণে। দুই বছর পর এই চলচ্চিত্রটি আবারও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে ঢাকার বিনোদন সাংবাদিকদের কারণে। সিনেমাটা বাজারে না চললেও, এটিকে চালানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন এর পরিচালক। সেই 'চালানোর' চেষ্টা থেকেই আমরা কাজ শুরু করেছি। বেশ কয়েক দিন ধরেই আমরা এই সিনেমার বেশ কয়েকজন কলাকুশলীর সাথে যোগাযোগ করেছি। কথা বলেছি। তবে সেই পরিচালকের সাথে কথা বলতে পারিনি। তিনি আমাদের সাথে কথা বলতে আগ্রহী ছিলেন বা কোন কারণে এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। তবে আমাদের জানার জায়গা গুলো নিশ্চিত করেছেন চলচ্চিত্রটির একাধিক কলাকুশুলী। আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল এই চলচ্চিত্র 'ব্যাপক' এবং 'বড় পরিসরে' প্রচারের কথা বলে দুই জন সিনিয়র বিনোদন সাংবাদিক দেড় লাখ করে তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এই দুই সাংবাদিক হলেন যমুনা টেলিভিশনের আহমেদ তাওকীর ও একাত্তর টিভির বুলবুল আহমেদ জয়। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিনেমা সংশ্লিষ্ট একজন দাবি করেন, এই দুই সাংবাদিক নিজে থেকে আগ্রহ প্রকাশ করেন বড় করে প্রচারের। নিজেরাই সেই প্রচারের জন্য 'খরচা-পাতিও' দাবি করেন। এরপর পরিচালক তাদেরকে ব্যাংকে টাকা অথবা চেক দিতে চাইলে তারা রাজি হন না। তবে শেষ পর্যন্ত গুলশানের একটা রেস্তোরাঁয় বসে এই টাকা ক্যাশে লেনদেন হয়। যদিও এরপর দুই সাংবাদিকের কাছ থেকে 'ব্যাপক' এবং 'বড় পরিসরে' তেমন কোন প্রচারই পাননি পরিচালক। আমরা এই দুই চ্যানেলের ইউটিব ঘেটে দেখতে পাই দুইটি 'প্যাকেজ' স্টোরি এবং কয়েকটি দায় সারা 'উভ' ছাড়া এই চলচ্চিত্র নিয়ে তারা তেমন কোন কাভারেজই দেননি। ফলে পরিচালকের টাকা পুরোটাই চলে যায় রেস্তোরার পাশের হাতিরঝিলে! পরবর্তীতে এ বিষয় নিয়ে পরিচালক বেশ কয়েকবার তাদের (দুই সাংবাদিকের) সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে, তারা বলেন "এই টাকায় এরচেয়ে বেশি কিছু করা সম্ভব নয়।" ফলে পরিচালক অনেকটা 'মন খারাপ' করেই দেশে আর কোন চলচ্চিত্র বানাতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এছাড়াও, নিউজ করে এই পরিচালকের ক্যারিয়ার শেষ করে দেয়ার ভয়ও দেখান সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেলের এই দুই সিনিয়র সাংবাদিক। এদিকে টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এই সমঝোতাকে প্রত্যাখান করা হয়েছে। যা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে। এছাড়াও নিয়ে কথা বলার সময় বেশ কয়েকজন তারকাই একটি সিন্ডিকেটের কথা উল্লেখ করেন। বিনোদন সাংবাদিকতার এই সিন্ডিকেটে রয়েছেন ৭ জন টিভি সাংবাদিক। যারা নতুন কোন সিনেমা আসলেই, টাকা ছাড়া প্রচার না করার হুমকি দেন। এর বাইরেও রয়েছে পত্রিকা এবং অনলাইনের আলাদা সিন্ডিকেট, যদের কাছে অনেকটা বন্দী মৃতপ্রায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গন। যাদের নিয়ে আমাদের থাকছে আগামীতে আরও পর্ব।
  • Previous Post

    মীনা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস কেলেংকারি!

Two Comments

আপনারও পছন্দ হতে পারে<

চ্যানেল ২৪-এ বিতর্কিত প্রতিবেদন: আওয়ামী লীগের প্রবাসী সরকার গঠন

প্রতিবেদনটি দেখে প্রথমেই প্রশ্ন আসে, কি দিয়ে প্রতিবেদক তার বক্তব্য এসটাবলিশড করলো? কার ইন্টারভিউ বা বক্তব্য প্রচারিত হল?

কেন আত্মহত্যা করতে হল সীমান্ত খোকনকে?

সীমান্ত খোকন জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দামিহা ইউনিয়নে।

মতামত দিন