ঈদুল ফিতরের আগের চাঁদ রাতেই আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে অনলাইন নিউজপোর্টাল সারাবাংলা ডটনেট। জাতীয় একটি দৈনিক এর ৪৫ কর্মীর বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস প্রদানের বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের মাত্র একদিন পর, সারাবাংলা ডটনেট নিজ প্রতিষ্ঠানের দুই জেলা প্রতিনিধিকে ঈদ বোনাস চাওয়ায় বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করেছে। এমন সিদ্ধান্তকে অনেকেই ব্যঙ্গ করে বলছেন—এটাই সারাবাংলার 'ব্যতিক্রমী ঈদ বোনাস।

সূত্র জানায়, সারাবাংলা ডটনেটের ঢাকার প্রধান কার্যালয় এবং চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিসের অধিকাংশ স্টাফ ঈদ বোনাস পেলেও, বিভিন্ন জেলায় নিযুক্ত জেলা প্রতিনিধিদের বোনাস দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল গ্রুপে দুই প্রতিনিধি সময়মতো বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবি জানান। এর ৩ দিন পর, রোববার রাতে কোনো ধরনের লিখিত বা মৌখিক নোটিশ ছাড়াই তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির একাধিক কর্মী অভিযোগ করেন, সম্প্রতি মালিকানা পরিবর্তনের পর থেকেই সারাবাংলায় অস্থিরতা বাড়ছে। জানা যায়, গাজী গ্রুপের মালিকানায় থাকা অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনায় থাকলেও, গ্রুপ চেয়ারম্যান ও সাবেক পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর গ্রেপ্তারের পর সারাবাংলার মালিকানা চলে যায় আইসিসি কমিউনিকেশন লিমিটেডের হাতে। নতুন মালিকানায় সেপ্টেম্বরে কার্যক্রম শুরু করে আইসিসি, যদিও আগস্ট পর্যন্ত বেতন পরিশোধ করে গাজী গ্রুপ।

সাবেক চিফ নিউজ এডিটর রহমান মুস্তাফিজের তত্ত্বাবধানে কিছুটা গুছিয়ে উঠলেও, তাকেও পরবর্তীতে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর হেড অব নিউজ হিসেবে দায়িত্ব পান গোলাম সামদানি, যিনি অতীতে আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।  

সারাবাংলার কর্মীদের মতে, স্টাফদের বেতন নির্দিষ্ট সময়ে পরিশোধ করা হলেও জেলা প্রতিনিধিরা নিয়মিতভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। সাধারণত মাসের ২০ তারিখের পর বেতন পান তারা, যা ঈদের মতো বড় উৎসবের সময় আর্থিক চাপ সৃষ্টি করে। এরই প্রতিবাদে দুই প্রতিনিধি কণ্ঠ তুললে, তাদের হঠাৎ চাকরিচ্যুত করা হয়।

এ ধরনের আচরণ নিয়ে গণমাধ্যম অঙ্গনে সমালোচনা দেখা দিয়েছে। বিশেষত, যখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সাংবাদিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে সচেষ্ট, তখন এমন একতরফা ও নোটিশবিহীন সিদ্ধান্ত প্রাতিষ্ঠানিক নৈতিকতা ও সাংবাদিকতার মৌলিক মূল্যবোধকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

মিডিয়া মনিটর/এক্সকে