Statement

নওগাঁয় রোগী ভাগানোর প্রতিবেদন: সাংবাদিকের ওপর হামলা ও হুমকি

নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রোগী ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগে তৈরি করা বার্তা২৪-এর ভিডিও প্রতিবেদনটি সম্প্রতি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম ফেরদোউস তার প্রতিবেদনে ডাক্তার এম.এ আর. চৌধুরীর বিরুদ্ধে রোগী অন্য ক্লিনিকে প্রেরণের অভিযোগ তুলে ধরেন। সংশ্লিষ্ট ডাক্তারও এই অভিযোগটি স্বীকার করেছেন। শহিদুল ইসলাম জানান, নওগাঁ সদর হাসপাতালে ৬-৭ দিন ধরে অনুসন্ধান চালানোর পর তিনি জানতে পারেন যে ডাক্তার এম.এ আর. চৌধুরী রোগী জোর করে ছাড়পত্র দিয়েছেন এবং রোগীর সাথে বাজে আচরণ করেছেন। এ বিষয়ে জানতে ৮ম তলায় রোগীর ছেলর সাথে কথোপকথনের সময় মনিরুল নামের এক ব্যক্তি এসে তাকে নিউজ প্রকাশে বাধা দেন। শহিদুল অভিযোগ করেন, যখন তিনি ওই ব্যক্তিকে প্রশ্ন করেন কেন তাকে রিপোর্ট করতে নিষেধ করা হলো, তখন তার প্রতি হিংস্র আচরণ করা হয়। এবং সাংবাদিক শহিদুল সেখান থেকে চলে আসেন। প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরে, স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুব আলমের ছেলে মনিরুল ইসলাম শহিদুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলেন যে, শহিদুল তার স্ত্রীর ভিডিও ধারণ করেছেন, যা পুরোপুরি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন শহিদুল। এ বিষয়ে চ্যালেঞ্জ ও দিয়েছেন তিনি। প্রতিবেদন প্রচারিত হওয়ার পর থেকে শহিদুল বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি পেতে থাকেন। এরপর নওগাঁ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের অফিসে তাকে আটকিয়ে রাখেন এবং জোরপূর্বক ভিডিও স্টেটমেন্ট নেন মনিরুল ও তার দলেরা। জানা গেছে,সাংবাদিক ইউনিয়নে কয়েকজন সাংবাদিকও উপস্থিত ছিলেন এর মধ্যে দেশ রূপান্তরের পাভেল, সময়ের কন্ঠস্বরের আব্দুল মান্নান, দৈনিক বাংলার রিফাত হোসাইন সবুজ এবং রূপালি বাংলাদেশের খোরশেদ আলম রাজু ছিলেন । এছাড়া, ইউনিয়নের সভাপতি এস.এম. আজাদ হোসেন মুরাদ সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম নয়ন ভিডিও সরানো ও ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন এ ঘটনায়। মুরাদের ভাগ্নে রুবেলও এই ঘটনায় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শহিদুল দাবি করেন, তাকে ফেসবুকে ক্ষমা প্রার্থনার স্ট্যাটাস দিতে বাধ্য করা হয় এবং ভিডিও দ্রুত মুছে ফেলতে বলা হয়। প্রাণনাশের ভয়ে এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার আশঙ্কায় তিনি অফিসে কল করে আপাতত ভিডিও সরিয়ে নেন। এই বিষয়ে বাংলাদেশ মিডিয়া মনিটরের পক্ষ থেকে নওগাঁ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এস.এম. আজাদ হোসেন মুরাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এ ঘটনা স্থানীয় সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় যেসব বাধার সম্মুখীন হতে হয় তা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে। সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হুমকি কেবল স্বাধীন গণমাধ্যমের পরিপন্থী নয়, বরং এর মাধ্যমে সংবাদ পরিবেশনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি।
  • Previous Post

    পার্বত্য চট্টগ্রামের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে সাংবাদিকতা: নতুন বিপদের মুখে

Two Comments

আপনারও পছন্দ হতে পারে<

মতামত দিন