Fact

প্রধানমন্ত্রীর নামে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ একুশে টিভির পরিচালকের বিরুদ্ধে

বজলুর রশিদ: প্রধানমন্ত্রীর ট্রাম কার্ড, আশ্রয়ন প্রকল্পের প্রচারণার নাম করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একুশে টিভির পরিচালক রবিউল হাসান অভি। সারাদেশে আশ্রয়ন প্রকল্প নিয়ে ডকুমেন্টারি বানাচ্ছেন তিনি। এই কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও এই প্রকল্প থেকে নিয়েছেন ৫ কোটি টাকা। কিন্তু মানহীন এই কাজে খরচ হয়নি ৫ ভাগের এক ভাগও । কাজের অনুমতি পেয়েই ব্যবসা খুলে বসেন অভি। একুশে টিভির মালিক এস আলম গ্রুপের মাসুদ আলম আর তার ভাই টেলিভিশনটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ লাবুকে মিথ্যা গল্প সাজিয়ে শোনান। বলেন, প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের নির্দেশ- উন্নয়ন প্রচারণার এই প্রকল্প বাস্তবায়নে এস আলম গ্রুপকেই টাকা দিতে হবে। সে সময় আর্থিক জালিয়াতির মামলা এবং আন্তর্জাতিক ও দেশী গনমাধ্যমে প্রচারিত খবরে বেকায়দায় থাকা এস আলম গ্রুপ প্রধানমন্ত্রী দপ্তরকে খুশি রাখতে বরাদ্দ করেন বিপুল অংকের টাকা। পাশাপাশি জনবল-গাড়ি-ক্যামেরা থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সবই দেয়া হয় একুশে টিভির পক্ষ থেকে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তা ও তার পিএসকে খুশি করে পাওয়া এই প্রকল্পের কাজে অভি ও তার টিম সব সময় ব্যবহার করেন সরকারি সুযোগ সুবিধা, প্রটোকল ও সার্কিট হাউজ । থাকা-খাওয়া ছাড়াও ডিসি ও ইউএনওদের গুণগান প্রচারের শর্তে তাদের কাছ থেকেও নেন নানা উপঢৌকন। প্রধানমন্ত্রী ও তার দপ্তরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে বদলী ও প্রমোশনের গল্প সাজিয়েও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে রবিউল হাসান অভির বিরুদ্ধে। এদিকে শেখ হাসিনাকে নিজের খালা বলে পরিচয় দেন প্রধানমন্ত্রীর বান্ধবী মৃত বেবী মওদুদের ছেলে এই অভি৷ সবার কাছে গল্প ফাঁদেন, প্রতিদিন শেখ হাসিনা না কী তাকে অন্তত ১০ বার ফোন করে তার শরীর ও খাওয়া দাওয়ার খোঁজ নেন। প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যা ফোন কলের অভিনয় করেও বিত্তশালী নানা মানুষের কাছে টোপ ফেলে এই লোক। ২০২২ সালের মাঝামাঝি গাজিপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের বহিষ্কারাদেশ তুলে তাকে দলে ফিরিয়ে এনে আবারও মেয়র করতে শেখ হাসিনাকে 'বোঝানোর' কথা বলেও বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় অভি। তবে প্রথম দফা টাকা দিলেও অভির বাটপারি বুঝতে পেরে, পরে আর বাকী টাকা দেয়নি জাহাঙ্গীর। এমন অভিযোগ আরো দুই ঠিকাদার ও ব্যবসায়ীর। তাদেরকে প্রধানমন্ত্রী দপ্তর দিয়ে লাইসেন্স বাতিলের ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাইয়ে দেয়া, তাঁর দপ্তরে নানা তদবির, নোমিনেশন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে নানাজনের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা নেয় একুশে টিভির এই পরিচালক। আর এই কাজে ব্যবহার করে শেখ হাসিনার সাথে তোলা কয়েকটি পুরোনো ছবি ও ভূয়া ফোনকলের অভিনয়। মৃত বান্ধবীর ছেলে হিসেবে বেকার অভিকে একুশে টেলিভিশনের পরিচালক বানিয়ে এক সময় আয়ের সুযোগ করে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু দুর্নীতি, সব সময় মাতাল হয়ে থাকার পাশাপাশি নানা নেশায় আসক্ত অভির বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগে আসায় অনেক আগেই স্নেহের হাত সরিয়ে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী অফিসের একাধিক সূত্র এই বিষয়টি বাংলাদেশ মিডিয়া মনিটরকে নিশ্চিত করেছেন। এদিকে নির্বাচনের আগে সারাদেশের আশ্রয়নের চিত্র তুলে ধরার কথা ছিল অভির ডকুমেন্টারির মাধ্যমে। কিন্তু বিভিন্ন জেলায় দলবল নিয়ে গিয়ে অতিরিক্ত মদ্যপানে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পরে অভি ও তার লোকজন। বেশ কয়েকবার হাসপাতালেও যেতে হয়েছে। ফলে গত দুই বছরে ৬৪ জেলার অর্ধেক কাজও শেষ করতে পারেনি অভির টিম। বাংলাদেশ মিডিয়া মনিটর জেনেছে, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও লেখা অন্য বই প্রকাশে শেখ হাসিনার নিজস্ব ও সরকারী তহবিল ব্যবহার করা হলেও অভিযোগ আছে, বিভিন্ন নেতা ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ডোনেশনের নামে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে এই অভি। প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাংগিয়ে প্রতারণা করে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে হাতিয়ে নেয়া কোটি কোটি টাকা ভারতে পাচার করেছে অভি। জানা যায়, কোলকাতার এক নারীকে বিয়ে করে সেখানেই জমি কিনে বহুতল এপার্টমেন্ট বাড়ি করেছে সে। একুশে টিভির এই পরিচালকের বিরুদ্ধে সমকামীতা, সহকর্মীদের গায়ে হাত তোলা, ব্ল্যাকমেইল ও ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। যা নিয়ে পরে বিস্তারিত কাজ করবে বাংলাদেশ মিডিয়া মনিটর।
  • Previous Post

    সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে প্রার্থীতা ফিরে পেলেন সাংবাদিক হত্যা মামলার প্রধান আসামী

Two Comments

আপনারও পছন্দ হতে পারে<

চ্যানেল ২৪-এ বিতর্কিত প্রতিবেদন: আওয়ামী লীগের প্রবাসী সরকার গঠন

প্রতিবেদনটি দেখে প্রথমেই প্রশ্ন আসে, কি দিয়ে প্রতিবেদক তার বক্তব্য এসটাবলিশড করলো? কার ইন্টারভিউ বা বক্তব্য প্রচারিত হল?

কেন আত্মহত্যা করতে হল সীমান্ত খোকনকে?

সীমান্ত খোকন জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার দামিহা ইউনিয়নে।

মতামত দিন