গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমের অফিসে হামলা হয়। সেই হামলার তালিকাতে ছিল শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খানেরও অফিস। তেজগাঁও অফিসে হামলার চারদিন পর ৯ আগস্ট তিনিটি দৈনিক পত্রিকা বন্ধ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। যে বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করছিলেন দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের নির্বাহী সম্পাদক সালেহ বিপ্লব। তবে আমাদের সময় ডট কম নিউজ পোর্টালটি নিয়ে সে সময় কেউ কিছু জানায়নি। একই অফিস থেকেই পরিচালিত হতো এই অনলাইন নিউজ পোর্টালটিও। তবে আমরা এই অনলাইনটির ওয়য়েবসাইটে কার্যক্রম চলমান দেখে , এটা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হই। আমরা ওয়েসবসাইটে নিয়মিত নিউজ আপডেট করার পাশাপাশি দেখতে পাই নির্বাহী সম্পাদকের জায়গায় রাশিদ রিয়াজ নাম লেখা। যার সম্পর্কে খুব বেশি কিছু আমরা নে পেলেও ওয়েবসাইটে গত কয়েকদিনে বেশিকিছু ভারত সম্পর্কিত নিউজ রাশিদ রিয়াজের নামে  খুঁজে পাই। নির্বাহী সম্পাদকের নামের নিচেই দেখতে পাই দুবাই এর একটি ঠিকানা। যে ঠিকানা বলছে, দুবাই এর ফাহদি স্ট্রিট এর গোলাব ভবন থেকে এটি পরিচালিত হচ্ছে। ঐ এলাকায় এই নামে একটা  দোকান ও একটি আবাসিক ভবন আমারা পেয়েছি। তবে এরচেয়েও মজার তথ্য পাই আমরা , নিচে দেয়া তিনটি নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করলে। দুবাই এর যে নাম্বারটি দেয়া ছিল সেটা থেকে আমরা একটা ছবি ও একটা নাম পাই। নাম দেয়া ছিল, রাজীব। আমরা সেই ছবি ধরে খুঁজে পাই রাজীব আহমেদকে। যিনি মূলত নাঈমুল ইসলাম খানের আইটি বিশেষজ্ঞ। যার নিজস্ব একটা প্রতিষ্ঠান আছে রাইদা-আইটি নামেও। এই রাইদা আইটির ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, তিনটা অফিসের ঠিকানা দেয়া আছে। যার মধ্যে একটা নাঈমুল ইসলাম খানের পত্রিকা অফিস। এছাড়াও বাংলামোটর ও কুমিল্লাতেও তার অফিস রয়েছে। আমরা অনলাইনটির বিষয়ে জানতে হোয়াটসাপে রাজীবের সাথে যোগাযোগ করলে, তার দিক থেকে প্রথমে কোন সাড়া পাইনি। পরে শুধু 'সরি' লিখে উত্তর দিয়েছেন। আর কিছুই বলেননি। তখন আমরা তার ফেসবুক প্রোফাইল ও মিচুয়াল ফ্রেন্ডদের সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হই, এই ব্যক্তিই নাঈমুল ইসলাম খানের আইটি বিভাগ দেখতেন। এছাড়াও তার ফেসবুকে ঐ অফিসের এবং সংবাদকর্মীদের সাথে বিভিন্ন সময়ের ছবি পাওয়া যায়। তবে তার স্থায়ীভাবে দুবাইতে বসবাসের প্রমাণ না পাওয়া গেলেও, ২/১ বার গিয়েছেন এমনটা বোঝা গেছে। যেহেতু এই ব্যক্তি আইটি বিভাগ দেখতেন তাই অনুমান করা যাচ্ছে এই ওয়েবসাইটটি তিনি পরিচালনা করছেন বা তার নিয়ন্ত্রণেই আছে। তবে নাঈমুল ইসলাম খানের প্রভাব কতটা বোঝা যায়নি। এছারা অন্য দুইটি নাম্বারের একটিতে রাহিব নামের একজনের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। ট্রু কলার এপস বলছে, এই ব্যক্তিও আমাদের সময় ডট কমের সাথে সম্পৃক্ত। এছাড়া আরেকটি হোয়াটসাপ নাম্বার ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহৃত হয়। টেলিটকের যে নাম্বারটিতে আমরা রাহিব নামে একজনকে শনাক্ত করেছি, সেই নাম্বারটি রাজীবের রাইদা আইটির ওয়েবসাইটেও ব্যবহার করা হয়েছে। যা থেকে অনুমান করা যায় দুইটা নাম্বারই এই রাজীবের। এদিকে রাজীবের কাছে ওয়েবসাইটের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও ফেসবুক পেইজের নিয়ন্ত্রণ নেই সেটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। কারণ ১ আগস্টের পর কোন নতুন কোন পোস্ট ফেসবুকে আপডেট করা হয়নি। তবে সাইটে নিউজ আপলোড হচ্ছে নিয়মিতই। পুরো বিষয়টি বিশ্লেষণ করে মনে হয়েছে, নাঈমুল ইসলাম খানের নেতৃত্বেই নিউজপোর্টালটি রাজিব পরিচালনা করছে। যেহেতু আত্মগোপনে থেকেই জমি বিক্রি করেছেন নাঈমুল ইসলাম খান , সেখান থেকে এটা পরিচালনা করা এমন কঠিন কোন কাজ না এই 'ঝানু ও ধূর্ত' সাংবাদিকের জন্য। আর নির্বাহী সম্পাদক ও দুবাইয়ের ঠিকানাটা দেয়া হয়েছে সবাইকে 'বোকা' বানানোর জন্য। যাতে কেউ ধারণা করতে না পারে কোথা থেকে এটা পরিচালিত হচ্ছে।