Investigation

একমাত্র তথ্যসূত্র পুলিশ

বাংলাদেশের অপরাধ বিষয়ক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা অনেক দিন ধরেই রুগ্নভাবে চলছে। দেশে যখন সঠিক গণতন্ত্র না থাকে তখন তার প্রভাব গিয়ে গিয়ে সাংবাদিকতাতেও পড়ে। কারণ গণমাধ্যম হল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। কিন্তু বাংলাদেশ যখন থেকে ধীরে ধীরে অথরেটিয়ান বা কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত হতে শুরু করেছে তখন থেকেই দেশের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মান ও ধরনও বদলে যেতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ মিডিয়া মনিটর গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ধরণের উপর নজর রাখছিল অনেকদিন ধরেই। এসব নিউজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে শতকরা ৯১ ভাগ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি হচ্ছে শুধুমাত্র পুলিশের বক্তব্য এবং সরবরাহ করা তথ্যের উপর। যে সাংবাদিক আগে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করতে পারে বা পুলিশের পক্ষ থেকে আগে যোগাযোগ করা হয় সেই হচ্ছে সেরা অনুসন্ধানী সাংবাদিক। এ ধরনের কর্মকাণ্ড নিয়ে ইংরেজি দৈনিক নিউ এজে প্রতিবেদক মুক্তাদির রশিদের একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। যেখানে প্রতিবেদক দাবি করেছেন, গত কিছুদিনে বিভিন্ন গণমাধ্যমে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের যেসকল ভিডিও প্রচার হয়েছে তা পুলিশই বিভিন্ন হোয়াটস আপ গ্রুপের মাধ্যমে সরবরাহ করেছে। ঠিক এভাবেই হয় পুলিশ সরবরাহ করছে অথবা সাংবাদিকরা পুলিশের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে তা কোন যাচাই-বাছাই ছাড়াই প্রকাশ করে দিচ্ছে অনেকটা পুলিশের জনসংযোগ কর্মকর্তার মত। এ বিষয় নিয়ে আমরা বেশ কয়েকজন আইনজীবির সাথে কথা বলি, তারা সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করে নেন, যে ব্যক্তির ভিডিও এভাবে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে এখানে তার ব্যক্তিগত মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এমনকি বিচারকার্যকেও প্রভাবিত করা হচ্ছে। এছাড়াও এ ধরনের ঘটনা সাংবাদিক এবং পুলিশ বাহিনীর পেশাদারিত্বকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দীপ আজাদ মনে করেন, তথ্য বা ভিডিও যে কোন সোর্স থেকেই আসতে পারে। কিন্তু সেটি যাচাই-বাছাই না করে অথবা নিজস্ব আইটেম বলে চালিয়ে দেয়া কোন ভাবেই নৈতিকভাবে সমর্থন করা যায় না। তিনি আরও বলেন, এক্ষেত্রে ঘোষণা থাকা উচিত যে, এই তথ্য বা ভিডিও (পত্রিকা/টিভির নাম) নিজস্ব আইটেম নয়। এটি আমাদের পক্ষ থেকে যাচাই বাছাই করা যায় নাই বা করা হয় নাই। বাংলাদেশে এ ধরনের সাংবাদিকতা শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালে সেনা শাসনের আমলে। তখন বিভিন্ন রাজনীতিবিদকে অপরাধী করতে এরকম ভিডিও সরবরাহ করা হতো এবং তা প্রচারও করা হতো।
  • Previous Post

    বাংলাদেশে নাশকতার মামলা দিয়ে ৫ সাংবাদিককে হয়রানি

Two Comments

আপনারও পছন্দ হতে পারে<

হাসিনার ইস্যু মেকার চ্যানেল ২৪ এর ইমরান

কে এই আব্দুল্লাহ আল ইমরান? হাসিনার বাবাকে নিজ হাতে গুলি করা নূর চৌধুরীকে কানাডা থেকে ফেরত আনার গুরুদায়িত্ব নিজ কাধে তুলে নেওয়া ব্যক্তিই আব্দুল্লাহ আল ইমরান।

মতামত দিন