Free Press

কালো টাকায় গণমাধ্যমে সাদা এনআরবিসি ব্যাংক

গত মার্চের ২২ তারিখ দেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম অর্থপাচার, ঋণ অনিয়ম, অতিরিক্ত ব্যয় ও নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ প্রচার করে নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের বিরুদ্ধে। সংবাদ্গুলিতে উঠে আসে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমালসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার নানা ধরনের অনিয়ম ও দূর্নীতির খবর। যদিও এই সংবাদ প্রচারের আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই এই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করতে শুরু করেন। এসব আলোচনা-সমালোচনা শুরু হবার পরই নড়েচড়ে বসে ব্যাংকটি। নিজেদের কালো চেহারা সাদা করতে শুরু করেন অর্থের বিনিময়ে সংবাদ প্রচারের কাজ। মূলত গত জানুয়ারি থেকেই বেশ কিছু টিভি এবং পত্রিকাতে ব্যাংকটি তাদের সেরা হিসাবে প্রচারের জন্য অর্থ ঢালতে শুরু করেন। কারণ তারা জানতে পেরেছিলেন, তাদের নিয়ে বড় সংবাদ আসছে। এক অনুসন্ধানে দেখা যায়, অর্থের বিনিময়ে পারভেজ তমালের কালো চেহারা এবং ব্যাংকের কুকীর্তি ঢাকতে সবচেয়ে বেশি তৎপর ছিল সাবেক মেয়র আনিসুল হকের মোহাম্মদী গ্রুপের নাগরিক টিভি। টেলিভিশনটির বার্তা প্রধান হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব দিপ আজাদ। বেসরকারি এই টেলিভিশনটি তমাল এবং তার ব্যাংক নিয়ে চারটি পজেটিভ স্টোরি প্রকাশ করেছে। এই অন্যায় ঢাকতে টেলিভিশনটির সাথে পারভেজ তমাল প্রায় ২৫ লাখ টাকার লেনদেন করেন বলেও একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এর পরের অবস্থানেই রয়েছে এটিএন নিউজ এবং ইংরেজি দৈনিক দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। এই দুইটি প্রতিষ্ঠানই । দুইটি প্রতিষ্ঠানই তাদের দর্শক এবং পাঠকদের কাছে ব্যাংকটিকে অন্য সব ব্যাংকের চেয়ে আলাদা এবং 'সাধু' হিসেবে পরিচিত করতে শুরু করে। এখানেও তারা প্রায় ২০ লাখের কাছাকাছি টাকা ঢালে। সবচেয়ে মজার বিষয় ছিল, ট্রান্সকম গ্রুপের বাংলা দৈনিক প্রথম আলোতে ব্যাংকটি নিয়ে করা পজেটিভ নিউজ। যে নিউজ এনআরবিসি ব্যাংক তাদের ফেসবুক পেইজেও প্রচার করে। মজার বলার কারণ হল, এই টড়ান্সকম গ্রুপের ইংরেজি দৈনিক দ্যা ডেইলি স্টারই এনআরবিসি ব্যাংকের বিরুদ্ধে চার পর্বের ধারাবাহিক প্রকাশ করে। যদিও একটি সূত্র দাবি করেছিল, টাকা-পয়সা নিয়ে বনিবনা না হওয়াতেই ডেইলি স্টার এই প্রতিবেদনগুলি প্রকাশ করে। এর বাইরেও সময় টেলিভিশন, মোহনা টিভি, গ্লোবাল টিভি, ঢাকা পোস্ট ও নিউজ বাংলাসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম টাকার বিনিময়ে এনআরবিসি ব্যাংক ও চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমালের হয়ে প্রোপাগান্ডা সংবাদ ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে। এর পাশাপাশি তমাল জানুয়ারি থেকে বিদেশে থাকা বেশ কয়েকজন সোশ্যাল এক্টিভিস্টকেও টাকা দিয়েছেন যাতে তাদের নিয়ে কোন লেখালেখি না হয়। সেই সূত্র থেকেই জানা যায় তমাল প্রায় কোটি টাকার কাছাকাছি খরচ করেছেন তার কালো চেহারাকে সাদা করতে। এককালীন এই টাকার বাইরেও তমাল এসব গণমাধ্যমের সঙ্গে বিজ্ঞাপনের আশ্বাস দিয়েও নিজের অপরাধ গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনগণের চোখ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পেরেছে।
  • Previous Post

    বিতর্কিত ইউনাইটেড মেডিকেলের সামনে দুই সাংবাদিক লাঞ্চিত

Two Comments

আপনারও পছন্দ হতে পারে<

চা শ্রমিকদের চেয়েও কম বেতন দেয় ঢাকার কিছু গণমাধ্যম

গণমাধ্যমের এই প্রতিটি শাখাতেই বেতন বৈষম্যের পাশাপাশি রয়েছে আরেকটি ভয়ংকর দিক, তা হলো বেতন বৃদ্ধি না হওয়া। কোথাও কোথাও তো বেতন বৃদ্ধি হয় না বহু বছর। আবার কোথাও কোথাও হলেও তা নামমাত্র 'ইনক্রিমেন্ট'।

চাঁদ রাতে সারাবাংলার 'ব্যতিক্রমী' ঈদ বোনাস: জেলা প্রতিনিধিদের বোনাস চাওয়ায় চাকরিচ্যুত

এমন সিদ্ধান্তকে অনেকেই ব্যঙ্গ করে বলছেন—এটাই সারাবাংলার 'ব্যতিক্রমী ঈদ বোনাস।

অসোন্তষ ছড়িয়েছে জেমকন গ্রুপের ঢাকা ট্রিবিউনে

এদিকে, কর্মীদের শান্ত করতে আগামী রোববার বিশেষ সভা আহ্বান করেন বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্যর্থ, সম্পাদক জাফর সোবহান।

মতামত দিন